
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে এক কৃষকের তিন বিঘা জমিতে লাগানো ১২০০ কলাগাছ কেটে ফেলার পাশাপাশি হামলা, মারধর ও ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে একই এলাকার একদল প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মোঃ হাতেম আলী ভূরুঙ্গামারী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সকালে ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার শিলখুড়ী ইউনিয়নের উত্তর ধলডাঙ্গা (কালিয়ারচর) গ্রামে।
অভিযোগে জানা যায়, বিবাদী নূরুল হক ওরফে কানা, আব্দুল হক, রহম আলী, রাসেল, আল আমিনসহ মোট ১৮ জন নামীয় এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৩০ থেকে ৪০ জন মিলে হাতেম আলীর ক্রয়কৃত ও দীর্ঘদিন ধরে ভোগদখলে থাকা জমিতে জোরপূর্বক প্রবেশ করে। তারা সেখানে থাকা প্রায় ১২০০টি কলাগাছ কেটে প্রায় ৬ লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধন করে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী হাতেম আলী বলেন, “আমার ক্রয়কৃত জমিতে তারা জোর করে প্রবেশ করে কলাগাছ কেটে দিয়েছে। প্রতিবাদ করলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়। পরবর্তীতে আমার ছেলে ও ভাতিজার উপরও হামলা চালিয়ে টাকা ও মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নিয়েছে।”
অভিযোগে আরও বলা হয়, হাতেম আলীর ছেলে হুমায়ুন কবির ও ভাতিজা রফিকুল ইসলাম গরু কেনার জন্য ভূরুঙ্গামারী বাজারে আসার পর ফেরার পথে দক্ষিণ ধলডাঙ্গা হাজিমার্কেট এলাকায় অতর্কিতে হামলার শিকার হন। এ সময় বিবাদীরা তাদের লাঠিসোটা দিয়ে মারধর করে, বাজাজ সিটি ১০০ মোটরসাইকেল, দুটি মোবাইল ফোন (Redmi ও Realme) এবং নগদ ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে ভূরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।বর্তমানে তারা চিকিৎসাধীন রয়েছেন।আহত হুমায়ুন কবির বলেন,“আমরা তিন বিঘা জমি লিজ নিয়ে কলা চাষ করেছিলাম। কোনো শত্রুতা না থাকলেও তারা জমি দখলের উদ্দেশ্যে গাছগুলো কেটে দিয়েছে। এতে প্রায় পাঁচ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।”
স্থানীয় কয়েকজন জানান,যে কারণেই হোক, কারও ফসল নষ্ট করা মানবিক নয়। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া উচিত।”অভিযুক্ত নূরুল হক নুরুর বক্তব্য জানতে হাজি মার্কেটের এক ব্যক্তির মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি পাওয়া যাননি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিনি বলেন, “কলা গাছগুলো হাতেম আলীরাই লাগিয়েছিল, কিন্তু নুরুর লোকজনই কেটে ফেলেছে। এর বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়।”
ভূরুঙ্গামারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আল হেলাল মাহমুদ বলেন, “লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ আব্দুল জব্বার বলেন, “উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রতিবেদন দিলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কৃষি প্রণোদনা দিয়ে সহায়তার উদ্যোগ নেওয়া হবে।”
জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে কৃষকের কলা বাগান কেটে ফেলা, হামলা ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয়রা দ্রুত দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।